জামায়াত প্রার্থীর প্রচারণায় বিএনপির দফায় দফায় হামলা-গুলিবর্ষণ, শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর

 

জামায়াতের প্রার্থীর প্রচারণায় বিএনপির দফায় দফায় হামলা ও গুলিবর্ষণ
জামায়াতের প্রার্থীর প্রচারণায় বিএনপির দফায় দফায় হামলা ও গুলিবর্ষণ  © সংগৃহীত ও সম্পাদিত

পাবনার ঈশ্বরদীতে পাবনা-৪ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলের নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপির হাবিবুর রহমান হাবিবের সমর্থকদের দফায় দফায় হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। তালেব মন্ডলের গাড়ি সহ শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চর গড়াগড়ি এলাকায় জামায়াত নেতার উপর আক্রমণের এ ঘটনা ঘটে । আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তাদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে রাতে পাবনা জেলা শহরে এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শহরের চাপা মসজিদ থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষণ শেষে শহীদ চত্বরে এসে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। পাবনা জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল গাফফার খান, পাবনা সদর পৌর আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল লতিফ, সদর উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা খন্দকার জাকারিয়া, ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর শাখার সভাপতি গোলাম রহমান প্রমুখ।

এ সময় উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রব সেক্রেটারি ইব্রাহিম খলিল আইনুল সহ জামায়াত শিবিরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে পাবনা জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলের নির্বাচনী প্রচারণাকালে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবের সমর্থিত একদল সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা উল্লেখ করে বলেন,  শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করার এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

অধ্যাপক আব্দুল গাফফার খান বলেন, জনগণের সমর্থন হারিয়ে যারা রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা, তারাই গণতান্ত্রিক প্রচারণাকে বাধাগ্রস্ত করতে সহিংস পথ বেছে নেয়। পাবনা জেলা জামায়াত কোনো উত্তেজনা, সংঘাত বা বিশৃঙ্খলা চায় না। আমরা শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়ভিত্তিক নির্বাচনী পরিবেশে বিশ্বাস করি। কিন্তু পরবর্তীতে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হলে জনগণ তা মেনে নেবে না।

তিনি আরও বলেন, হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা, নির্বাচনী মাঠে সবার জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাব এবং আগামী নির্বাচনে চূড়ান্ত বিজয়ের মাধ্যমে এ হামলার প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে। 

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদীর চড় গড়গড়ি এলাকায় দুইদিন আগে স্থানীয় জামায়াতের কর্মীদের মারধর করেন স্থানীয় বিএনপি নেতা মক্কেল মৃধা ও লোকজন। পূর্ব নির্ধারিত ওই এলাকায় প্রচারণা চালাতে যান পাবনা-৪ আসনের জামায়াতের প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল ও তার সমর্থকরা। তারা চর গড়গড়ি আলহাজ্ব মোড়ে পৌঁছালে মক্কেল মৃধার ছেলের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা করে। পরে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ফেরার পথে মৃধাপাড়ায় আবারও হামলা চালায় মক্কেল মৃধার লোকজন। এতে আবু তালেব মন্ডলের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।এ সময় তাকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়, তবে সামান্য আহত হন। এছাড়া জামায়াতের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন, তাদের শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির আওতায় আজকে সেখানে গিয়েছিলাম কিন্তু হাবিবুর রহমান হাবিবের সমর্থক বিএনপির সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়, আমাদের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে। আমার গাড়িসহ আমাদের শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। অন্তত ৫০-৬০ জন আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. স. ম আব্দুন নুর বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) স্পটে  আসেন, আমরা স্পটে  আছি। স্পটে ছাড়া কিছুই বলা যাবে না। বক্তব্য নিতে হলে আরও পরে নিতে হবে।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও পাবনা-৪ আসনের বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

নবীনতর পূর্বতন

Smartwatchs