
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে দেশের অন্য যেকোনো রাজ্যের তুলনায় সবচেয়ে বেশি বিদেশি বন্দি অবস্থান করছে। জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরো (এনসিআরবি) প্রকাশিত ‘প্রিজন স্ট্যাটিস্টিকস অব ইন্ডিয়া ২০২৩’ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের মোট ৬,৯৫৬ জন বিদেশি বন্দি আছেন। তার মধ্যে ২,৫০৮ জন, অর্থাৎ ৩৬ শতাংশ পশ্চিমবঙ্গের সংশোধনাগারে আটক আছেন। এই বিদেশিদের মধ্যে ৮৯ শতাংশ অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে অভিযুক্ত। তাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বিদেশি বন্দিরা রাজ্যের মোট ২৫,৭৭৪ বন্দির মধ্যে শতকরা ৯ ভাগ। বাংলাদেশি বন্দিদের মধ্যে ৭৭৮ জন দণ্ডপ্রাপ্ত এবং ১৪৪০ জন বিচারাধীন। দ্বিতীয় স্থানে আছে মিয়ানমার। এদেশটির বিচারাধীন বন্দিদের বেশির ভাগের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। রাজ্যের কারাগারে থাকা ৭৯৬ জন বিদেশি দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দির মধ্যে ২০৪ জন নারী। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ৪,৯০৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের অর্ধেকেরও বেশি অংশ পশ্চিমবঙ্গে। ফলে রাজ্যে বিদেশি বন্দির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। ২০২৩ সালে রাজ্যের কারাগারগুলোতে ছিল ৭৯৬ জন বিদেশি দণ্ডপ্রাপ্ত এবং ১,৪৯৯ জন বিচারাধীন বন্দি।
এনসিআরবির তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। একজন আইনি সহায়তা পরামর্শক বলেন, বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পেছনে একাধিক কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম আইনজীবীর খরচ বহন করতে না পারা,বিচারিক বেঞ্চের অভাব এবং আগেই অতিরিক্ত চাপে থাকা আদালতগুলো। একজন জ্যেষ্ঠ রাজ্য কর্মকর্তা জানান, অবৈধ বাংলাদেশি বন্দিদের সাধারণত ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও)-এর নির্দেশে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
কিন্তু আমাদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে ডিপোর্টেশনের হার অত্যন্ত কম। ২০২৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের কারাগারগুলোর অকুপেন্সি রেট (দখল হার) ছিল ১২০ শতাংশ। অর্থাৎ, ২১,৪৭৬ জনের ধারণক্ষমতার জায়গায় ২৫,৭৭৪ জন বন্দি (দেশি ও বিদেশি) রাখা হয়েছিল মোট ৬০টি কারাগারে। রাজ্যের একমাত্র নারী কারাগারের বন্দি উপস্থিতির হার ছিল ১১০.২ শতাংশ। ২০৪ জন নারী এবং ১২ জন ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি আছেন। ৩৭১ জন নারী এবং ৯ জন ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি, যারা মোট ১,৪৯৯ জন বিচারাধীন বিদেশি বন্দির অংশ।