বউমা আসার খবরে বাড়ি ছেড়ে পালালেন শশুড় বাড়ির সবাই


ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, নীলফামারী:

বউমা আসার খবরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন স্বামী, শশুড়-শাশুড়ি সহ অন্যান্য সদস্যরা। ঘটনাটি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়নের চুলানীপাড়া গ্রামে শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে এই ঘটনাটি ঘটেছে।

দীর্ঘদিন প্রেমের পর ২০১১ সালে ডোমার উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়নের চুলানীপাড়া গ্রামের সুধীর চন্দ্র দাসের ছেলে শ্রী রতন চন্দ্র দাসকে বিয়ে করেন রিতা রানী দাস। তবে প্রেমের বিয়ের পর শুরু হয় যৌতুকের নির্যাতন ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ। রিতার দাবি, স্বামী রতন আপোষের কথা বলে তাঁর কাছ থেকে নিয়েছেন ৫ লক্ষাধিক টাকা। বিচার চাইতে রিতা শ্বশুরবাড়িতে এলে, খবর পেয়ে রতন ও তার পরিবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।

প্রেম, বিয়ে, তারপর লড়াই—নীলফামারীর রিতা রানী দাসের জীবন এখন আদালত আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামের নাম। ২০১১ সালে প্রেম করে বিয়ে করেন রিতা ও রতন দাস। কালী মন্দিরে বিয়ে, পরে কোর্ট এফিডেভিট—সবই ছিল বিশ্বাসে বাঁধা। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে মিলল না স্বীকৃতি।

রিতা রানী দাস জানান, "প্রথমে মেনে না নিলেও এলাকাবাসীর চাপে গ্রহণ করে রতনের পরিবার। এরপরই শুরু যৌতুকের চাপ ও নির্যাতন। যৌতুক না আনায় রিতাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে আবার সংসারের কথা বলে কয়েক ধাপে ৫ লক্ষাধিক টাকাও নেয় তার স্বামী রতন। আর মনে অনেক কুবুদ্ধি ছিলো আমি সেটা বুঝিনি এর আগে সে আমার বাচ্চা নষ্ট করেছে। আমি এখন খুব অসহায় যাওয়ার কোনো রাস্তা নাই আমার।"

রিতা রানীর মা জানান, "বিয়ের পর শশুর বাড়িতে আমার মেয়ে কিছুদিন সংসার করেছিলো। এরপর তাকে এই বাড়ি থেকে বের করার জন্য বিভিন্ন নির্যাতন করা হতো। তারা আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করছে। আমার মেয়ে ২০১২ সালে নারী নির্যাতনের মামলা করেন। এরপর ঢাকায় চলে গিয়ে একটা চাকরী শুরু করে। কিছুদিন পর তার স্বামী রতন ঢাকায় আপোষের আশ্বাসে নতুন করে সম্পর্ক গড়লেও কখনো ঘরে তোলেননি স্ত্রীকে। উল্টো প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।"

রতনের প্রতিবেশীরা জানান, রিতার দাবী যৌক্তিক রয়েছে। ন্যায়বিচারের মধ্য দিয়ে তারা আবারো শান্তিতে সংসার জীবনে ফিরুক এমন প্রত্যাশা সবার।

রতনের খালাতো ভাই শ্রী শান্তি পদ দাস জানান, "রিতা গ্রামের বাড়িতে আসার খবর পেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে রতন সহ তার পরিবারের সদস্যরা। তবে তাদের সম্পর্ক ও রিতার সকল কথা সত্য বলে জানান। আমিও অনেকবার বলেছি এবং তাদের শান্তি চেয়েছি কিন্তু আমার কথা কেউ শুনেনি।"

বামুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মমিনুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি অবগত। তদন্তে মেয়েটির অভিযোগের সত্যতা পেলে তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করা হবে বলে তিনি জানান।

নবীনতর পূর্বতন

Smartwatchs