
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়বেন মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। বর্তমানে তিনি রাবি শাখার সভাপতির দায়িত্বে আছেন। সম্প্রতি আমার দেশকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তার স্বপ্ন, বর্তমান সমস্যা থেকে উত্তরণের পরিকল্পনা এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি তার অঙ্গীকার নিয়ে বিস্তারিত জানান।
অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের মাস্টার্সের এ শিক্ষার্থী সাক্ষাৎকারের শুরুতেই জানান, কেন তিনি প্রার্থী হলেন সে বিষয়ে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো কাছ থেকে দেখেছি। হলের আসন সংকট, পড়াশোনার অনুকূল পরিবেশের অভাব কিংবা নিরাপত্তা ঘাটতি— এসব সমস্যা শিক্ষার্থীদের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই জায়গা থেকেই মনে হয়েছে একজন প্রকৃত প্রতিনিধি দরকার, যিনি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে পারবেন। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই রাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।
আবাসন সংকটকে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে মনে করেন জাহিদ। তার মতে, প্রচুর শিক্ষার্থী ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশোনা করছে, যা তাদের মানসিক ও আর্থিক চাপ বাড়াচ্ছে।
গবেষণার সীমিত সুযোগ প্রসঙ্গে এই ভিপি প্রার্থী বলেন, একই সঙ্গে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও গবেষণার সুযোগ সীমিত। আধুনিক ল্যাব, পর্যাপ্ত বই ও ডিজিটাল রিসোর্স সেন্টারের অভাব শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বিকাশে বড় বাধা। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।
কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চান—এমন প্রশ্নে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের এই ভিপি প্রার্থী বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠুক আধুনিক, নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব। যেখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার থাকবে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। শিক্ষার্থীরা গবেষণা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং জ্ঞানচর্চার মধ্য দিয়ে নিজেদের সম্ভাবনা বিকশিত করতে পারবে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠুক একটি আদর্শ উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র, এটাই চাওয়া। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে জাহিদ বলেন, প্রথমেই আবাসন সংকট সমাধানে উদ্যোগ নেব। আমরা নতুন হল নির্মাণের দাবি জানাব এবং পুরোনো হলগুলোর সংস্কার নিশ্চিত করার চেষ্টা করব। শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক হবে, যেখানে শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান এবং আধুনিক কারিকুলামের সংযোজন নিয়ে আলোচনা করা হবে। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ক্যাম্পাসকে নিরাপদ রাখতে আমরা জোর দেব, যাতে কেউ নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের কাজ নির্বাচিত হওয়ার পর শুরু হবে না বরং এটি হবে দীর্ঘদিনের কাজেরই ধারাবাহিকতা। আমরা সব সময় শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছি, নির্বাচিত না হলেও তাদের অধিকার আদায়ে কাজ চালিয়ে যাব।
নারী শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকে ভুল ধারণা ছড়াচ্ছে যে আমরা নির্বাচিত হলে নারী শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতা হারাবে বা কোনো শাসন চাপিয়ে দেওয়া হবে। আসলে বিষয়টি উল্টো। আমরা নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করব।