ঢাকা কলেজ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
ঢাকা কলেজ ছাত্রদল নেতা কর্তৃক নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগকে পূর্ণবাসন ও সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে হুমকি এবং কলেজ প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ না করার প্রতিবাদে ঢাকা কলেজে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাত পৌনে ৮ টায় কলেজের হলপাড়া থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এরপর কলেজের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে বকুল তলায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘ঢাকা কলেজের অ্যাকশন, ডাইরেক একশন,’ ‘ছাত্রলীগের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান,’ ‘ছাত্রলীগের পুনর্বাসন, হবে না হবে না, সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের মূখ্য সংগঠক রাকিব হোসেন বলেন,‘গত কয়েকদিন আগে আমরা ছাত্রলীগের একজনকে কলেজ ক্যাম্পাসে ধরেছিলাম পরে পুলিশে দিলে ছাত্রদলের কর্মীরা তাকে ছাড়িয়ে আনে। আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, জুলাই আন্দোলনের এক বছর হচ্ছে তারপরেও কেন ছাত্রলীগের চূড়ান্ত তালিকা করছেন না। আপনারা যদি আপনাদের কাজ সঠিকভাবে না করেন, আমাদের জন্য যেমন যোগ্য টিচার দরকার, তাদের আনতে বাধ্য হব, যোগ্য টিচার আনতে বাধ্য হব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা কলেজ প্রসাশনকে বলতে চাই, মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের হওয়ার নোটিশ দেওয়ার পরেও কেন মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা অবৈধভাবে হলে অবস্থান করছে। অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।’
ভুক্তভোগী সাংবাদিক ফয়সাল আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমি নিউজ করেছি। নিউজ প্রকাশের পর রাত ১০টা ৫১ মিনিটে আমার হোয়াটসঅ্যাপে খাইরুল মেসেজে লিখেছে ‘তর নামে আগামীকাল মামলা করমু’। সে দিন রাতে মিথ্যা অভিযোগ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় যে, আমি নাকি বিকেলে নিউজের জন্য ছাত্রদল নেতার কাছে ২০ হাজার টাকা চেয়েছি। কিন্তু আমি তখন দৈনিক জনকন্ঠের অফিসে ছিলাম। এসব নিয়ে আমি কিছু ভাবছি না। সাংবাদিকতা করলে হামলা মামলা হবে তাই বলে তো সত্য প্রচার বন্ধ করে দিতে পারি না। সে মামলা করুক কথা হবে আদালতে।’
তবে ছাত্রলীগ পূনর্বাসন ও সাংবাদিককে হুমকির কথা অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা খাইরুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘এরকম কিছু বলি নাই। ও শুধু নিজের মতো করে নিউজ করছে। আইনের আশ্রয় নেওয়া আমার অধিকার। মামলা হুমকি হিসেবে নেবেন কেন? আমার বিরুদ্ধে একটা মিমাংসিত বিষয়, তথ্যের ভুল একটা বিষয় নিয়ে যদি নিউজ করে, আমার ক্যারিয়ার নিয়ে যদি টানাটানি করে তাহলে তো আমি বলবো আইনের আশ্রয় নিবো, মামলা করবো।'
এ বিষয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক পিয়াল হাসান বলেন, ‘সেন্ট্রালে বিষয়টি জানিয়েছি। রাতে মিটিং কল করব অনলাইনে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে কি হবে না হবে। সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া হয়েছে সে সাংবাদিকদের সাথেই তো একই জায়গায় বসবাস করে। তারা একজন আরেকজনকে এখনো অনার করছে সম্মান করছে কথা বলছে। সেই জায়গায় সে কি বলল নাকি করল। আর মামলা দেওয়া তো হুমকি হতে পারে না। আইনের আশ্রয় আপনিও নিতে পারবেন আমিও নিতে পারব, যে কেউ। যদি ভিত্তিহীন সংবাদ হয় তাহলে তো আইনের আশ্রয় নিতেই পারে। আর ভিত্তিহীন যদি না হয় তাহলে সাংবাদিকদের যে কাজ সে কাজ তো সাংবাদিকরা করতেছে। তারা যেভাবে তথ্য দিয়ে নিউজ করেছে আমরা সেইভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব। এগুলো নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছি বাকিটা সেন্ট্রাল থেকে সুরাহা পাবো।’