মোঃ শরিফ বিল্লাহ
প্রকাশক ও সম্পাদক
সবচেয়ে প্রাচীন, সহজলভ্য ও শক্তিশালী গণমাধ্যম হিসাবে বেতার পৃথিবীব্যাপী বহুল পরিচিত।
আমাদের অনেকেরই ধারণা, ইন্টারনেটের অগ্রযাত্রার এ সময়ে রেডিও তার গুরুত্ব হারিয়েছে। ধারণাটি মোটেও সঠিক নয়। কারণ সময় যেমন বদলেছে, ঠিক তেমনি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রচারণার ধরনও বদলে গেছে। এখনো বহু মানুষ বেতার শোনে, বেতারের ওপর নির্ভর করে। সারা বিশ্বে বেতার এখনো অন্যতম জনপ্রিয় গণমাধ্যম। বেতারের রয়েছে দুর্গম স্থানে পৌঁছানোর শক্তি। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রসারের ফলে সম্প্রচার জগতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রতিযোগিতাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। গ্রামগঞ্জ ও দুর্গম এলাকায় এখনো বেতার তথ্য আদান-প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম। আমরা হয়তো অনেকেই জানি, ইতালির বিজ্ঞানী মার্কনি বেতারের আবিষ্কারক। কিন্তু অপর এক তথ্যে জানা যায়, বাঙালি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু মার্কনির আগেই বেতার আবিষ্কার করেছিলেন। এ তথ্যটি প্রকাশ করেছেন খোদ মার্কনির নাতি পারসেশচে মার্কনি, যিনি নিজে ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরির একজন জ্যেষ্ঠ জ্যোতির্বিদ। ১৯০১ সালে মার্কনি আটলান্টিকের ওপারে প্রথম বেতার সংকেত পাঠান এবং পালটা সংকেত গ্রহণ করেন; কিন্তু এর আগেই ১৮৯৯ সালে মার্কনি বাংলার জগদীশচন্দ্র বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বসুই প্রথম বিজ্ঞানী, যিনি রেডিও ও মাইক্রো ওয়েভসের অপটিক্স নিয়ে কাজ করেছিলেন।
আজকে একজন বেতারের শ্রোতাবন্ধুর সাথে আপনাদের পরিচয় করে দিতে চাই। তিনি হলেন মো. সুজন ইসলাম। তিনি ২০০৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ী, দক্ষিণপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম মো. আফজাল হোসেন, মাতা মোছা. জোসনা বেগম। তারা ৩ ভাই ১ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। বেতারের শ্রোতা জীবনের পাশাপাশি শিক্ষা জীবনেও তিনি বেশ সফল। পিএসসি জিপিএ-৫.০০,জেএসসিতে ৪.৫০, এসএসসিতে ৪.৬৭,এবং এইচএসসিতে ৪.০৮, বর্তমানে এইচএসসি
পরীক্ষা শেষ করে আপাতত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কিভাবে তিনি একজন বেতার শ্রোতা হয়ে উঠলেন?
সুজন নিয়মিত সময় করে বেতার শোনেন এবং বেতারের বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পর্কে লেখালেখি করেন, বেতারের এই শ্রোতা প্রতিবেদককে জানান, বেতারের সঙ্গে যুক্ত হওয়া মূলত ২০১৮ সাল থেকে। তখন শুধু শুনেই যেতাম লেখালেখি করার অভ্যাসটা গড়ে ওঠে নি বিগত ২০১৯ সালে তিনি তার লেখালেখির দ্বারা বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বেতার কেন্দ্রে প্রশংসিত হয়েছেন । এ ছাড়াও তার এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কু-সংস্কার প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলেছেন।
গত ২৪ নভেম্বর-২০২২ খ্রি. মটুকপুর স্কুল এন্ড কলেজে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি গড়ে তোলার লক্ষে সেমিনারের আয়োজন করেন এবং এতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন তিনি এবং যেটি বাংলাদেশ বেতার ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রের ফেসবুক পেজে প্রচারিত হওয়ার পাশাপাশি ইউনিসেফ দ্বারা প্রশংসিত হয়েছেন।
পুরষ্কারের ঝুলিটাও হয়েছে সমৃদ্ধ ঠাকুরগাঁও বেতার কেন্দ্রে ৭টি, রংপুর বেতার কেন্দ্রে ৪টি, বাংলাদেশ বেতার ঢাকা কেন্দ্রে ১টি, জনসংখ্যা স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেল বাংলাদেশ বেতারে ৩টি, বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাংলাদেশ বেতারে ৪টি, পুরস্কার অর্জন করার পাশাপাশি তার লেখনীর মাধ্যমে তিনি সমাদৃত হয়েছেন এবং পত্র গুচ্ছ ডিসেম্বর-২০২১ , পত্র গুচ্ছ ডিসেম্বর-২০২৩ , আলাপন আগস্ট-২০২১ শ্রেষ্ঠ পত্র লেখক হয়ে সাক্ষাৎকার প্রদান করে ছিলেন। এ ছাড়াও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান আমার মেন্টরে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শ্রোতা নির্বাচিত হয়ে ঢাকা বেতারের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে সরাসরি সাক্ষাৎকার প্রদান করে ছিলেন।
বাংলাদেশ বেতার রংপুর, বাংলাদেশ বেতার ঠাকুরগাঁও, বাংলাদেশ বেতার ঢাকা, জনসংখ্যা স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেল, বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাংলাদেশ বেতার এবং বিবিসিতে ও লেখালেখি করে ছিল। বন্ধ হওয়া ‘বিবিসি বাংলা’ সংবাদ পরিক্রমা ও সংবাদ প্রবাহতে দীর্ঘদিন যাবৎ যুক্ত ছিলেন।
তিনি ছাত্রজীবনে বেতার ও শ্রোতাদের সাথে সু-সম্পর্ক রেখেন চলেছেন। আমরা তাহার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি বেতারের সাথে তার সুসম্পর্ক বজায় থাকুক।