জব্দকৃত চোরাই গাছসহ আটকৃত ভ্যান টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ , পুলিশের বিরুদ্ধে

 


নীলফামারীর জেলার ডোমার উপজেলার গোসাইগঞ্জ বন বিভাগে জব্দকৃত কাঠসহ ভ্যানচালক রুবেল ইসলামকে আটক করে ৫৩ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের ভিডিও প্রকাশের পর এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ,৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পরদিন থেকেই পুলিশ ও বন বিভাগের কিছু কর্মচারীর সহযোগিতায় গোসাইগঞ্জ বন বিভাগের গাছ কাটা শুরু হয়। ইতোমধ্যে বনের বড় অংশ নিধন করে আবাদি জমি তৈরি করা হয়েছে। গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত কিছু পুলিশ সদস্য ইতোমধ্যে বদলি নিয়ে এলাকা ছেড়ে গেছেন। বন বিভাগ স্থানীয় কিছু সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাছসহ জব্দকৃত ভ্যানচালক রুবেল বলেন,গত ১০ অক্টোবর সন্ধ্যায় তোফা হোসেন, তফিজুল‌ ইসলাম তফি, বাচ্চা, বিটুলসহ কয়েকজন এসে বলে, প্রশাসনের সাথে কথা বলে রাখা আছে, ভয়ের কিছু নেই এই গাছগুলো নিয়ে যাও। তারা তিনটি ভ্যানে কাটা গাছ তুলে দেয়। পরে চিলাহাটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই পলাশ, এসআই আহসান হাবিব ও দুই কনস্টেবল আসলে, গাছ কাটা চক্র পালিয়ে যায়। তিনটি ভ্যানই পুলিশ আটক করে। দুই ভ্যানের কাঠ আবুল মেম্বারের চৌরাস্তায় বিক্রি করে দেওয়া হয়, আর আমাকে‌ চিলাহাটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে মারধর করে চালান দেওয়ার ভয় দেখানো হয়।তিনি আরও জানান, এই অবস্থায় আমি আমার ভাই জুয়েল ইসলামকে খবর দেই। পরে আমার ভাইয়ের মাধ্যমে পুলিশের দালাল আনিছারের নেতৃত্বে এসআই পলাশ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আমাকে আমার ভ্যান সহ ছেড়ে দেয়। এবং বাকি ৩ হাজার টাকা পুলিশের দালাল আনিসার ভাগাভাগি করে।এরপরও এসআই পলাশ বন বিভাগে এসে গাছ কাটা বাহিনীদের কাছে এসে টাকা নিয়ে যায়। দীর্ঘদিন থেকে নিয়মিত আমার সামনেই চিলাহাটির পুলিশ টাকা নিয়ে যাচ্ছে। তাদের সহযোগিতায় গোসাইগঞ্জ  বন বিভাগের গাছ কেটে বন উজার করা হচ্ছে। অনেক পুলিশ গাছের কাঠ কেটে বাড়ি নিয়ে গেছে।যা তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে।এসআই পলাশ ও হাবিব বন বিভাগে আসলে আমি তাদের বলি আমি একজন গরিব মানুষ ভ্যান চালিয়ে আমার সংসার চলে। সুদের উপর টাকা নিয়ে আপনাদের ৫৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। তখন এসআই পলাশ ও হাবিব বনের গাছ কাটা বাহিনীদের ডেকে বলে সবাই মিলে কিছু টাকা তুলে আমাকে ফেরত দিতে।কিন্তু তারা আমাকে কোন টাকা ফেরত দিচ্ছে না। রুবেল দাবি করেন, বিষয়টি প্রকাশ পেতেই এসআই পলাশ কয়েকজন পুলিশ নিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়েছে। এতে তিনি আতঙ্কে আছেন। এসআই আহসান হাবিব বলেন, তিনি রুবেলকে আটক বা ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে কিছুই জানেন না। এসআই পলাশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। চিলাহাটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল কাদের বলেন, বিষয়টি  সম্পর্কে সত্যতা পেয়েছি এবং জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশ সুপার মহোদয় ও ডোমার সার্কেল মহোদয় কে পাঠিয়েছি। ভোগডাবুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলাম কালু বলেন, ভ্যানচালকের কাছে টাকা নেওয়ার বিষয়টি শুনেছি, তবে কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। অতীতে গ্রাম্য পুলিশ দিয়ে বন বিভাগ পাহারা দেওয়া হয়েছিল এবং কিছু গাছ জব্দও করা হয়েছে। সহকারী পুলিশ সুপার (ডোমার সার্কেল) নিয়াজ মেহেদী বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। বিভাগীয় তদন্ত শুরু হচ্ছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নবীনতর পূর্বতন

Smartwatchs