ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) গেলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। আজ শনিবার (৩০ আগস্ট) ঢামেকে বিকেল ৫টার দিকে তাকে দেখতে যান তিনি।
এরপর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রশিবির সভাপতি। এ সময় তিনি বলেন, নুরুল হক নুরের ওপর হামলা মর্মান্তিক একটি ঘটনা। আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে, অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিচারের আওতায় আনার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, নুরুল হক নুরের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নিয়েছি। তার পরিবার খুবই উদ্বিগ্ন অবস্থায় রয়েছে। তিনি এখনো আশংকামুক্ত নন বলে ডাক্তার আমাদের জানিয়েছেন। উনার সুস্থতা কামনা করছি।
ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, নুরুল হক নুর একটি দলের প্রধান ও ডাকসুর সাবেক ভিপি। তাকে এভাবে পেটানোটা একটা পরিকল্পিত ঘটনা বলে মনে করি। এ ছাড়াও এ ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতির একটা অশনি সংকেতও বটে। এটি কখনোই কাম্য নয়। লাল শার্ট পরিহিত ব্যক্তিটি, আমরা যতটুকুন জেনেছি, তিনি একজন পুলিশ সদস্য। তিনি অন্যকোন দলের হয়ে কাজ করছেন কিনা। তার মোটিভটা বেশ আক্রমণাত্মক, যেটা স্বাভাবিক কোনো পেশাদারিত্বের জায়গা ছিল না। ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হোক।
একটা রাজনৈতিক কর্মসূচিকে যদি সরকার থ্রেট মনে করে, সেটাকে বাধা দেয়ার অনেক প্রক্রিয়া আছে। কিন্তু এভাবে হামলা-নির্যাতন, যেটাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বলা চলে। এটা মানা যায় না। এটা কখনোই কাম্য নয়। ডাকসু নির্বাচন আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে প্রশাসন একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবে প্রত্যাশা করি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জাপার কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
এই ঘটনা চলাকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হস্তক্ষেপ করেন। পরে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতিকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লাঠিপেটায় নুরুল হক নুরসহ তার দলের আরও বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন।
বর্তমানে নুরুল হক নুর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হামলায় তার মাথার হাড় ভেঙে গেছে। এ ছাড়া নাকের হাড় ও ডান চোয়ালের হাড়েও গুরুতর আঘাত লেগেছে। মাথার ভেতরে সামান্য রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকেরা তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে আশ্বস্ত করেছেন। তার চোখ-মুখ ফোলা রয়েছে এবং চোখেও রক্ত জমে আছে।
আঘাতের মাত্রা বিবেচনা করে তার চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যা তার চিকিৎসার সার্বক্ষণিক তদারকি করছে। শরীরে অন্য কোথাও গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেছেন।