ছাত্রদলের ১১ জনের কমিটিতে রাকসুর ভোটার চারজন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। তালিকায় ছাত্রদলের নবগঠিত ১১ সদস্যের কমিটির নাম আছে মাত্র ৪ জনের। বাকি ৭ জনের ছাত্রত্ব না থাকায় ভোটার বলে গণ্য হননি তারা।

নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী, শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই ভোটার বলে গণ্য হবে। এর বাইরে সান্ধ্যকালীন বা বিভিন্ন শর্ট কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা রাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

 খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী, এবারের রাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ২৫ হাজার ১২৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ১৫ হাজার ৪৪০ জন ও ছাত্রী ভোটার ৯ হাজার ৬৮৭ জন। মোট ভোটারের ৬১ শতাংশের বেশি ছাত্র আর ৩৮ শতাংশ ভোটার ছাত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন।

নির্বাচনের তালিকায় নাম আছে মাত্র চারজন নেতার। তারা হলেন সহসভাপতি লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নাঈম তুহিনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীত বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা, সাংগঠনিক সম্পাদক ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মিঠু এবং দপ্তর সম্পাদক আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নাফিউল জীবন।

তাও বিশেষ বিবেচনায় ২০২৩-২৪ সেশনে ভর্তি হয়ে ছাত্রত্ব ধরে রেখেছেন ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিঠু। অন্যদিকে মাস্টার্সে দুই বছর ধরে আছেন দপ্তর সম্পাদক আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নাফিউল জীবন।

তবে নতুন কমিটির ৭ জন নেতারই নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই। যার কারণে তারা ভোটার বলে গণ্য হননি।  তারা হলেন সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী সুলতান আহমেদ রাহী, সাধারণ সম্পাদক সংগীত বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী সর্দার জহুরুল, সিনিয়র সহসভাপতি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী সাকিলুর রহমান সোহাগ, সহসভাপতি ভূগোল বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, আইন বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী সাবিহা আলম মুন্নি, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম শফিক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারসি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী তাহের রহমান।

এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সর্দার জহুরুল বলেন, ‘আমরা কমিটি আরও বাড়াব। আমাদের হল কমিটি হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে। আমাদের মতো আমরা কমিটি করে নির্বাচন বা যেকোনো কাজে থাকব। আমাদের কমিটির কাজ চলমান। আমরা খুব দ্রুত কমিটি ঘোষণা করব। প্রশাসন ভোটার তালিকা তাদের মতো করে করেছে। আমাদের দাবিদাওয়া বিচার বিশ্লেষণ না করেই তারা কমিটি দিয়েছে। আমারই নির্বাচন করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আমাদের শত শত নেতাকর্মী আছে। তারাই নির্বাচন করবে। আমরা ৫-১০টা প্যানেল দিতে পারব।’

গতকাল এক বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমদ রাহী বলেন, ছাত্রদল কোনো ভুঁইফোড় সংগঠন না, এটা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় সংগঠন। যদি কেউ মনে করে রুয়ার মতো একতরফা বিনা ভোটে, জামাতের অনুগত হয়ে রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে, তাহলে এতগুলো শিক্ষার্থী, ছাত্রদলের নেতা কর্মীর রক্তের ওপর দিয়ে তাকে রাকসু নির্বাচন করতে হবে।

এর আগে গতকাল বেলা ৪টায়, ‘অবৈধ তফশিল, মানি না, মানব না’, ‘ষড়যন্ত্রমূলক রাকসু, মানি না, মানব না’, ‘পাকিস্তানের রাজনীতি, চলবে না, চলবে না’, ‘নকীব বাহিনীর রাজনীতি চলবে না, চলবে না’ স্লোগান দিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।


নবীনতর পূর্বতন

Smartwatchs